।। মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র কী? এর উৎপত্তি কীভাবে হয়? কীভাবে পাঠ করতে হয়? কী ফললাভ হয়? জানুন ভিডিওতে ।।

1 year ago
2

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র

ওঁ ত্র্যম্বকম যজামহে সুগন্ধিম পুষ্টিবর্ধনম্।
উর্বারুকমিব বন্ধনান্ মৃত্যৌর্মুক্ষীয় মামৃতাত্।।

ওঁ নমঃ শিবায়! শ্রাবণ মাস অর্থাৎ মহাদিদেব মহাদেবের মাস। অগণিত ভক্ত এ মাসে শিবার্চনা করে থাকেন। মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করে তারা শিবের কাছে বর প্রার্থনা করেন। কিন্তু, জানেন কি, কীভাবে এই মন্ত্রের উৎপত্তি, আর কী কী উপকার প্রাপ্তি হয় এই মন্ত্র জপ করলে? কীভাবেই বা এই মন্ত্র দিয়ে পূজা করতে হয় নীলকণ্ঠকে? আসুন জেনে নেওয়া যাক!

প্রথমে আসুন জেনে নিই কীভাবে এই মন্ত্রের উৎপত্তি।
কিংবদন্তি অনুসারে, একবার ঋষি মৃকন্ডু একটি সন্তান লাভের জন্য শিবের কাছে কঠোর তপস্যা করেছিলেন।

তাঁর ভক্তের তপস্যায় সন্তুষ্ট, ভগবান শিব ঋষি মৃকন্ডুকে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী সন্তান লাভের বর দিয়েছিলেন, কিন্তু ভগবান শিব ঋষি মৃকন্ডুকে বলেছিলেন যে এই পুত্রটি স্বল্পস্থায়ী হবে।

কিছুকাল পর ঋষি মৃকন্ডু পুত্র লাভ করেন। পুত্রের জন্মের পর ঋষিরা বলেছিলেন এই সন্তানের বয়স হবে মাত্র ১৬ বছর। একথা শুনে ঋষি মৃকন্ডু স্তব্ধ হয়ে যান।

স্বামীকে দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন দেখে ঋষি মৃকণ্ডুর স্ত্রী তাঁকে তাঁর দুঃখের কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি পুরো ঘটনা খুলে বললেন।

এ বিষয়ে তাঁর স্ত্রী বলেন, শিবের কৃপা থাকলে তিনি এই আইনও স্থগিত করবেন। ঋষি তাঁর পুত্রের নাম মার্কণ্ডেয় রাখেন এবং তাঁকে শিব মন্ত্রও দেন।

মার্কণ্ডেয় সর্বদা শিবভক্তিতে মগ্ন থাকতেন। সময় কেটে গেল এবং মার্কণ্ডেয় বড় হল। সময় ঘনিয়ে এলে ঋষি মৃকন্ডু তাঁর পুত্র মার্কণ্ডেয়কে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনের কথা বললেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, শিবজি চাইলে তা পিছিয়ে দেবেন।

তারপর পিতামাতার দুঃখ দূর করার জন্য মার্কন্ডেয় শিবের কাছ থেকে দীর্ঘায়ুর বর পেতে শিবের পূজা শুরু করেন। শিবের উপাসনার জন্য মার্কণ্ডেয় মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র রচনা করেন এবং শিব মন্দিরে বসে অখণ্ডভাবে জপ করতে থাকেন।

মার্কণ্ডেয়র বয়স যখন পূর্ণ হয়, তখন নপুংসকরা তাঁর প্রাণ নিতে আসে, কিন্তু সেই সময় মার্কণ্ডেয়জি ভগবান শিবের তপস্যায় লীন হন।

তা দেখে নপুংসকরা যমরাজের কাছে ফিরে গেল এবং ফিরে এসে পুরো ঘটনা খুলে বলল। তখন যমরাজ স্বয়ং মার্কন্ডেয়র প্রাণ নিতে আসেন।

যমরাজের আগ্রাসনে ভগবান শিব খুব ক্রুদ্ধ হন এবং ভগবান শিব তার ভক্তকে রক্ষা করার জন্য যমরাজের সামনে হাজির হন।

তখন যমদেব শিবকে আগের কথা মনে করিয়ে দেন, কিন্তু শিব মার্কন্ডেয়কে দীর্ঘায়ু দান করে আইন পরিবর্তন করেন।

এইভাবে মার্কণ্ডেয় ভগবান শিবের ভক্তিতে মগ্ন হয়ে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র রচনা করেন এবং ভগবান শিব যমরাজের হাত থেকে তাঁর জীবন রক্ষা করেন।

এই কারণেই মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র কে মৃত্যু প্রতিরোধকারী মন্ত্র বলা হয়।

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র:-
----------------

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র একটি সর্বরোগ হরণকারী মন্ত্র। এই মন্ত্রটি ভগবান মহাদেবকে স্মরণ করে রচিত। এই মন্ত্রটি জপ করলে মানুষ সব অশান্তি , রোগপীড়া , ব‍্যাধি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয়।

মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করার নিয়ম:-
শাস্ত্র মতে, সপ্তাহের শুরুর দিন অর্থাৎ সোমবার এই মন্ত্র জপ করলে, মহাদেব সন্তুষ্ট হন এবং জরা ব্যাধি থাকে না।

এই মন্ত্র ১০৮ বার পাঠ করতে হয়। বেলপাতা, ধুতুরা, আকন্দ, অপরাজিতা, কলকে প্রভৃতি ফুল শিবের প্রিয় বলে জানা যায়।

তবে মহাদেব বেলপাতাতেই সবচেয়ে বেশি তুষ্ট হন। তাই যে কোনও একটি দিয়ে নিষ্ঠা করে পুজো করলেও ভোলেনাথ সন্তুষ্ট হন।

মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করলে কি হয়?
গভীর রোগ, সঙ্কট, বাধা দূর করতে এই মন্ত্রকে কার্যকরী মনে করা হয়।

ধর্মীয় মতে, শিবকে প্রসন্ন করার জন্য মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করা হয়।

শিব ঠাকুরের বীজ মন্ত্র কি?
ওম হৌং জূং সঃ ওম ভূর্বুবঃ স্বঃ ওম ত্র্যম্বকম যজামহে সুগন্ধিম পুষ্টিবর্ধনম্। উর্বারুকমিব বন্ধনান্ মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাত্ ওম স্বঃ ভুবঃ ওম সঃ জূং হৌং ওম।।

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র কি ১১ বার জপ করা যায়?
যদি আপনার কাছে 108 বার মন্ত্র পাঠ করার সময় না থাকে তবে আপনি ১১ বার জপ করতে পারেন।

মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের প্রভাব:-
এটি ভয় দূর করে এবং সামগ্রিকভাবে নিরাময় করে।

এই মন্ত্র পাঠের ফলাফল:-
◆এই মন্ত্র নিয়মিত পাঠ করলে আপনার এবং আপনার পরিবারের মৃত্যু ভয় দূর হয়।
◆কেও যদি কোন দুরারোগ‍্য ব‍্যধিতে ভোগে তার তাড়াতাড়ি আরোগ্য লাভ হয়।

#meditation #moksh #মোক্ষ #মহামৃত্যুঞ্জয়মন্ত্র #শ্রাবণ_মাসে_শিবপূজা #শ্রাবণমাসেরসোমবার #শ্রাবণমাস #trending #viral

Loading comments...