ll দক্ষিনেশ্বরের মায়ের সঙ্গে এই মন্দিরের মায়ের এক বিশেষ সম্পর্ক আছে! চাইলেই আপনিও যেতে পারেন সহজে

1 year ago
1

#বাড়ির_পাশেই #নিস্তারিণী_মন্দির #মা_কালী

বন্ধুরা, আপনারা সবাই কমবেশি দক্ষিনেশ্বরে মা ভবতারিণী মন্দির গিয়েছেন। কিন্তু, আপনি কি জানেন রাণী রাসমণি যে মূর্তি ওখানে স্থাপন করেছেন সেটি আসলে ভাস্করের নির্মিত তৃতীয় মূর্তি! তাহলে প্রশ্ন হল বাকি দুটো মূর্তি গেল কোথায়? সেই মূর্তি দুটি কোথায় পূজিত হয়? আদৌ কি তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল! আসুন, জেনে নেওয়া যাক সে ইতিহাস!

দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর বিগ্রহের ইতিহাস
________

ঠাকুর রামকৃষ্ণ যাঁকে মা-বেটি বলে ডাকতেন, যাঁকে ঘিরে তাঁর সমস্ত লীলা- সেই মা ভবতারিণীর মূর্তি তৈরি করেছিলেন কাটোয়ার দাঁইহাটের নবীন ভাস্কর।
বর্তমানে মন্দিরে রৌপ্যপদ্মের উপর সন্নিবিষ্ট মায়ের যে ভুবনমোহিনী রূপের বিগ্রহটি আমরা দেখি, আসলে সেটি তৃতীয় মূর্তি।

মন্দির নির্মাণ কার্য শুরু হলে রাণী রাসমণি একজন ভালো ভাস্করের খোঁজ করতে থাকেন,যাকে দিয়ে তিনি তাঁর স্বপ্নে দেখা ভবতারিণীর রূপদান করাবেন।
রাণীমার গুরুদেব একজন ভালো ভাস্করের সন্ধান দেন। নাম নবীন চন্দ্র ভাস্কর।
নবীন ভাস্কর ছিলেন বংশগতভাবেই ভাস্কর শিল্পী।

নবীন ভাস্করের জন্ম ১৮৩৬ খ্রীষ্টাব্দে বর্ধমান জেলার দাঁইহাট গঞ্জে।
নবীন ভাস্করের বাবা রামচন্দ্র ভাস্কর কলকাতার ৩৭৪ নম্বর আপার চিতপুর রোডে “ওরিয়েণ্টাল স্টোন ওয়ার্কস”নামে একটি পাথরের মূর্তি নির্মাণের কারখানা করেছিলেন।ছোটবেলা থেকেই নবীন ভাস্করের শিল্প দক্ষতা প্রকাশ পায়। ১৮৫১ সালে রানিমা তাঁকে ডেকে একটি কালো কষ্ঠীপাথরের মায়ের মূর্তি গড়ার বায়না দিলেন। মাসাধিকাল ধরে হবিষান্ন খেয়ে আচার মেনে সেই সময় নবীন ভাস্কর কলকাতায় নিজেদের স্টুডিও ‘ওরিয়েণ্টাল স্টোন ওয়াকর্সে’র ঘরে বসেই দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মূর্তি নির্মাণ করেন।

মা কালী ঠিক কি কি রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন?

মূর্তি নির্মাণের পর তখন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের গর্ভগৃহের মাপে মা এর মূর্তি বেমানান দেখাচ্ছিল। রানী রাসমণি পুনরায় নতুন করে নবীন ভাস্করকে মা ভবতারিণীর মূর্তি তৈরির বরাত দেন, তবে এবার আগের মূর্তির থেকে বড় করতে বলেন। কিন্তু আবারো মূর্তি তৈরির পর সেটি বেমানান হল, ফলে রানীমার ইচ্ছায় তিনি আবার মূর্তি নির্মাণ করলেন এবং আগের দুইয়ের মাঝারি মাপের,যা অবশেষে রানীমার পছন্দ হলো।

নবীন ভাস্কর মা ভবতারিণীর যে তিনটে মূর্তি তৈরি করেছিলেন, তার প্রথমজন নিস্তারিণী ( বর্তমানে গোয়াবাগানের গুহদের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত- ১১,বৃন্দাবন বোস লেন, লক্ষী নারায়ণ সাউ এর তেলেভাজা দোকানের পাশের গলিতে অবস্থিত শিবু গুহর নিস্তারিনী কালী বাড়ি), দ্বিতীয় জন ব্রহ্মময়ী ( কাশীপুর মহাশ্মশানের কাছে প্রামাণিক কালীবাড়িতে প্রতিষ্টিত, যা 'মাসী কালী' নামে পরিচিত) তৃতীয়জন দক্ষিণেশ্বর ভবতারিণী।
তবে রাণী রাসমণি মারা যাওয়ার আগে মন্দিরের যে উইল করেন সেখানে এই মাকে জগদীশ্বরী বলে উল্লেখ আছে। শোনা যায়, মায়ের ভবতারিণী নামটি নবীন ভাস্করেরই দেওয়া।

আজ আমরা এসেছি, প্রথমজন অর্থাৎ মা নিস্তারিণীর মন্দিরে। আসুন, দেখে নিই এই মন্দিরের বর্তমান অবস্থা।

Loading comments...