ll মা লক্ষী পূজার কী কী নিয়মবিধি পালন করলে আপনি মায়ের কৃপা লাভ করবেন/ কবে মা লক্ষী পূজা করার নিয়ম ll

1 year ago
1

#মোক্ষ #বাস্তু #মা_লক্ষী #বাস্তুশাস্ত্র #মা_লক্ষী_পূজার_নিয়মবিধি
লক্ষ্মী (Laxmi) দেবীকে ধনরত্ন এবং ঐশ্বর্যের দেবী হিসাবে গণ্য করা হয়। মা লক্ষ্মীর কৃপায় সংসার ধন সম্পদে ফুলে ফেঁপে ওঠে। বাঙালি হিন্দুরা প্রধানত প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী দেবীর সাপ্তাহিক পূজা করে থাকেন। তবে লক্ষ্মী দেবীর ছবি বাড়িতে বা ঠাকুরের আসনে যেখানেই রাখুন না কেন, তা কেনার সময়ে অবশ্যই কিছু বিশেষ সংকেত দেখে তা কিনতে হয়। তাহলে সংসারে সুখ শান্তি এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা বিরাজ করে।

লক্ষ্মী দেবীর যেমন মূর্তি পূজা প্রচলিত আছে, তেমনই অনেকে বাড়িতে ঠাকুরের আসনে মা লক্ষ্মীর ছবি রেখেও পূজা করেন। মূর্তি হোক বা ছবি, একাগ্র চিত্তে মা লক্ষ্মীকে স্মরণ করলে, তিনি ভক্তকে নিরাস করেন না। তার কৃপায়ই সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং সুখ শান্তি বিরাজ করে।
সকল দেবদেবীর মত মা লক্ষ্মীরও বাহন আছে। মা লক্ষ্মীর বাহন হল পেঁচা। এই বাহন পেঁচা সহযোগেই মাতা লক্ষ্মী সব ঘরে ঘরে পূজিত হন। কথিত আছে, মা লক্ষ্মীর সাথে পেঁচার সঠিক অবস্থান সংযোগে, আপনার পরিবারে সুখ শান্তি বিরাজ করবে। কিন্তু কিভাবে বুঝবেন পেঁচার সঠিক অবস্থান?
মা লক্ষ্মীর ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বদা খেয়াল রাখবেন ছবিতে পেঁচার অবস্থান ঠিক কোথায় আছে। এমন ছবি কখনই ঘরে রাখা উচিত নয়, যেখানে মা লক্ষ্মী পেঁচার উপর অবস্থান করে আছেন। ঘরে এই ধরনের ছবি রাখলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আবার এমন ছবিও কিনবেন না যেখানে মা লক্ষ্মী দাঁড়িয়ে আছেন। সর্বদা পদ্মফুলের উপর অধিষ্ঠিত মা লক্ষ্মী দেবীর ছবিই শুভ বলে মনে করা হয়। এই ধরনের ছবিতে মা লক্ষ্মীকে আরাধনা করলে দেবীর কৃপায় আপনার সংসারে একাধারে সুখ শান্তি এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা বিরাজ করবে।

বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে বাড়িতে ভুল দিকে মূর্তি স্থাপন করা হলে ঘরে নেতিবাচক শক্তির সঞ্চার হয়। এছাড়াও, দেব-দেবীর পুজোও অসম্পূর্ণ থাকে  বলে বিবেচিত হয়।

প্রতি দেবতারই পুজোর একটি নির্দিষ্ট দিন থাকে। এবং প্রতি দেবতারই কিছু না কিছু প্রিয় বস্তু থাকে যা দিয়ে সেই নির্দিষ্ট দিনে তাঁর আরাধনা করলে তিনি ভক্তেদের উপর বিশেষ খুশি হন। সেই হিসেবে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দিনটি হল লক্ষ্মীআরাধনার জন্য নির্দিষ্ট।

বৃহস্পতিবার দিনটি মা লক্ষ্মীর দিন। এদিন মা লক্ষ্মীর পুজো, আরাধনা, উপবাস বিধেয়। কেন বৃহস্পতিবারই মা লক্ষ্মীকে পুজো করা হয়? জ্যোতিষমতে, বৃহস্পতি গ্রহটি খুবই মহৎ ও শান্ত গ্রহ হিসেবে স্বীকৃত। এদিন তাই যে কোনও আধ্যাত্মিক ক্রিয়া-কর্মই খুব সুফলদায়ী। কেননা, এদিন বৃহস্পতির আশীর্বাদ মেলে। বৃহস্পতি সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির সূচক।

এদিন বাংলার বহু বাড়িতে লক্ষী পুজো হয়। লক্ষ্মীদেবী শুধুমাত্র ধনদৌলতের দেবী নন, তিনি সৌন্দর্যের প্রতীকও। সব কিছু সুন্দরভাবে মণ্ডিত করতে গেলে লক্ষীদেবীর আরাধনা করতে হয়। বাড়ির মেয়েরা প্রতি বৃহস্পতিবার সংসারের মঙ্গলকামনায় এই ব্রত করেন।

তবে যথাযথ সুফল পেতে কতগুলি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লক্ষ্মীপুজো করা উচিত:

বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীপুজোর উপকরণ খুব সামান্যই লাগে। এ পুজোয় লাগে— সিঁদুর, ঘট, সামান্য ধান, সামান্য মাটি, আম্রপল্লব, সামান্য ফুল-দুর্বা , হরীতকী, ধূপ-দীপ-চন্দন, নৈবেদ্যে সামান্য আতপচাল ও জল।
তবে, শুক্রবার মা লক্ষ্মীকে উৎসর্গ করা হয়। মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেলে মানুষ সুখ, সমৃদ্ধি ও সম্পদ লাভ করে। মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে মানুষ বিভিন্ন উপায় পুজো করে এবং ব্রত রাখে। দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার কিছু বিশেষ দিন আছে, যখন এই প্রতিকার বা কিছু বিশেষ জিনিস এইদিন করা হয়, তখন অর্থ সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শুক্রবারের দিন মা লক্ষ্মীকে তাঁর প্রিয় খাবার দিয়ে ভোগ নিবেদন করলে তিনি শীঘ্রই প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের ওপর কৃপাদৃষ্টি দেন।
ক্ষীর ও মিছরি
সম্পদের দেবী লক্ষ্মীজি সাদা রঙের খাবার এবং দুধের তৈরি জিনিস পছন্দ করেন। তাই এই দিনে দুধ ও চালের তৈরি ক্ষীর নিবেদন করুন। এতে করে তিনি দ্রুত সন্তুষ্ট হবেন। এ ছাড়া মাকে চিনির মিছরি নিবেদন করা যেতে পারে। ক্ষীর-মিছরি নিবেদনের পর, ৭ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বাড়িতে এনে তাদের খাওয়ান এবং তাদের মিষ্টি ও ক্ষীর দিন।
মাখনের ভোগ
মা লক্ষ্মীকে মাখানির ভোগ দিন। পদ্ম ফুলের বীজ থেকে মাখানি তৈরি হয়। এজন্য একে ফুল মাখানিও বলা হয়। মা লক্ষ্মীকে ভোগ নিবেদনের সময় এটি বিশেষভাবে দেওয়া হয়।
বাতাসার ভোগ
সাদা রঙের ভোগ পছন্দ করেন মা লক্ষ্মী। তাই লক্ষ্মীজিকে বাতাসার ভোগ দিন।
শুক্রবার অবশ্যই এই প্রতিকারগুলি করুন
মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে শুক্রবার লক্ষ্মী মন্ত্র 'ওম শ্রী শ্রী নমঃ' ১০৮ বার জপ করুন।

এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে শুক্রবার দক্ষিণাবর্ত শঙ্খের খোলে জল ভরে, দেবী লক্ষ্মী ও ভগবান বিষ্ণুকে অভিষেক করলে তাঁরা প্রসন্ন হন।

এই দিন সন্ধ্যায় গরুর ঘি এর প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রদীপে কিছু কেশর রাখুন।

শুক্রবার সাদা রঙের কাপড় বা চাল দান করুন অভাবী মানুষকে।

শুক্রবার ঋণের লেনদেন এড়িয়ে চলতে হবে। কাউকে ধার দেবেন না বা কারও কাছ থেকে টাকা ধার করবেন না। কথিত আছে, এদিন ঋণ লেনদেনের কারণে দেবী লক্ষ্মী ক্রুদ্ধ হন।

বর্তমান সময় অনেকেরই খুব কম আলোতে থাকার অভ্যাস রয়েছে। তারা সন্ধ্যায় ঘরের আলো অনেকটাই কমিয়ে দেয়। তবে দেবী লক্ষ্মী ক্রুদ্ধ হতে পারেন এক্ষেত্রে। তাই শুক্রবার তো বটেই, সেই সঙ্গে অন্য কোনও দিন সন্ধ্যায় কম আলো রাখবেন না ঘরে।

এবার আসি, কোজাগরী লক্ষীপূজার একটি ঘটনা নিয়ে। আপনারা জানলে আশ্চর্যান্বিত হবেন।
একবার নবাব সিরাজুদুল্লাহ জগত শেঠকে কিছু দিতে চাইলেন | জগত শেঠ বাড়িতে সেই কথা জানালেন| জগৎ শেঠের মা ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মহিলা। তিনি জগৎ শেঠকে বললেন কোনো কিছু চাওয়ার আগে তুমি নবাবের কাছে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নেবে তিনি যেন তার দেওয়া কথা রাখেন| জগৎ শেঠ নবাবের কাছে আগে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়ে বলেন, নবাব আমি কিছুই চাইনা শুধু পূজার দিন নগরে কারো বাড়িতে যেন বাতি না জ্বলে, এই প্রতিশ্রুতি চাই|

বাকিটা ভিডিওতে দেখুন!

Loading comments...