ll সিঁদুর ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে কেন? কী কী বিষ শরীরে ঢুকতে পারে সিঁদুরের মধ্য দিয়ে ll

1 year ago
4

#স্পন্দন #বিজ্ঞান_সম্মত_আলোচনা #সিঁদুর_ব্যবহারে_সতর্কতা

🩸সিঁদুর এর বহুল প্রচলিত রাসায়নিক নাম হলো প্লাম্বাসো প্লাম্বিক এসিড। এছাড়া একে লেড অক্সাইড এবং ট্রাইলেড টেট্রাঅক্সাইডও বলা হয়। একে Red Lead ও বলা হয়ে থাকে। এটি মূলত সীসার একটি অক্সাইড উপাদান । এর আণবিক গঠন বেশ জটিল। এর গলনাংক 560°C এর অধিক। এটি এসিডে আংশিক দ্রবণীয়।

🩸 সিঁদুর এর গঠন দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক ধরনের । ল্যাবরাটরিতে মূলত দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করে সিঁদুর তৈরি করা যায় । একটিতে লেড অক্সাইড বা লেড অক্সাইড ও লেড গুঁড়োর মিশ্রণ কে মোটামুটি 450- 470°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করার মাধ্যমে। অন্যটিতে লেড মনোক্সাইডকে মোটামুটি 450–500°C তাপমাত্রায় বায়ুর উপস্থিতিতে উত্তপ্ত করার মাধ্যমে এই সিঁদুর তৈরি করা যায় ।

🩸সিঁদুর বা Pb3O4 এর জন্য GHS অর্থাৎ (Globally Harmonized System) এর Signal Word হলো Danger এবং এটিকে নিম্নোক্ত Hazards দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে-
Irritant
Bio-Hazard
Oxidizer
Chemical Health Hazard এই ভাবে।
তবে ভেষজ সিঁদুর, যেগুলোতে কৃত্রিমভাবে মার্কারি ( পারদ ) বা লেড (সীসা ) মিশানো হয়না, সেগুলোর জন্য উপরোক্ত বিপদ সংকেত গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা এসব Hazard Cautions মূলত কৃত্রিমভাবে মিশানো মার্কারি বা লেড এর কারণে প্রযোজ্য হয়। তাই এসব ভেষজ সিঁদুর নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়।

🩸যে কোনও প্রসাধনীতে সীসার মাত্রা প্রতি গ্রামে ২০ মাইক্রোগ্রামের থেকে বেশি হওয়া উচিত নয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এই পরিমাণের থেকে অনেক বেশি মাত্রায় সীসা মেশানো হচ্ছে সিঁদুরে। ফলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে মারাত্মকভাবে।

🩸চিকিৎসকেদের মতে সীসার মাত্রায় কম-বেশি হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। একেবারে সামান্য পরিমাণও যদি রক্তে মিশে যায়, তাহলে নার্ভের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে, সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ারও কমে যায়। ফলে কোনও কিছু শেখার ক্ষমতা কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, পেশির ক্ষমতা কমে যাওয়া, হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। এবার বুঝতে পরেছেন তো সিঁদুর কতটা ভযঙ্কর প্রভাব ফেলছে আমাদের শরীরের উপর।

🩸সম্প্রতি আমেরিকায় হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে সিঁদুর তৈরির সময় তাতে এমন কিছু উপাদান মেশানো হচ্ছে, যা আমাদের ত্বকের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। সেই সঙ্গে শরীরেরও খারাপ হচ্ছে।

🩸১১৮ ধরনের সিঁদুরের স্যাম্পেল সংগ্রহ করে তার উপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা দেখেছেন প্রায় ৮০ শতাংশ সিঁদুরেই নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে বেশি পরিমাণে লেড রয়েছে। এই পরিমাণ লেড বা সীসা নিয়মিত শরীরের সংস্পর্শে আসলে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, হাত বা কোনও খাবারের সঙ্গে মিশে যদি সীসা শরীরের অন্দরে চলে চায়, তাহলে তা আরও বিপদের। প্রসঙ্গত, এই ১১৮ ধরের সিঁদুরের মধ্যে আমেরিকার বিভিন্ন স্টোরে বিক্রি হওয়া সিঁদুর যেমন ছিল, তেমনি দিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতার একাধিক দোকান থেকেও সিঁদুর সংগ্রহ করা হয়েছিল। দেখা গেছে আমেরিকা থেকে সংগ্রহ করা সিঁদুরের মধ্যে ৮৩ শতাংশ এবং আমাদের দেশে থেকে সংগ্রহ সিঁদুরের প্রায় ৭৮ শতাংশে বেশি মাত্রায় সীসা রয়েছে।

বন্ধুরা বুঝলেন তো কি বিষাক্ত পদার্থ এই সিঁদুর! অতএব, সাধু সাবধান! সিঁদুর ব্যবহারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করুন।

Loading comments...