ll'পথের পাঁচালী'র লেখক কার চাপে লেখা শুরু করেছিলেন?বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের অজানা

1 year ago
6

আজ সিরিজ ' সূর্য ওঠার আগে'র তৃতীয় পর্ব। লিখনে পলাশ হালদার। পাঠে প্রিয়াঙ্কা দত্ত। প্রযোজনায় স্বপ্নসায়র।
ছোট থেকেই ছেলেটা খুবই মেধাবী। বরাবরই ক্লাসে প্রথম। চুড়ান্ত আর্থিক অনটনও তার ছাত্রজীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। কিন্তু তার বাবার অকাল মৃত্যুতে বৃহৎ সংসারের জোয়ালটা এসে পড়লো তার কাঁধে। তবুও হাজার বাধা বিঘ্নকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চললো পড়াশোনা। ইতিমধ্যে বিবাহ করলেন গৌরী দেবিকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুর্ভাগ্য এখানেও তাকে তাড়া করলো। যখন নিজেকে একটু গুছিয়ে নিচ্ছেন ঠিক সেই সময়েই এক বছরের মধ্যে প্রিয়তমা পত্নীকে হারালেন। যে সময়ে ভালোবাসায় ভুবন রঙিন হয়ে ওঠে, চোখে নতুন স্বপ্ন জেগে থাকে, ঠিক সেই সময়ে চলার পথের সাথীকে হারিয়ে তিনি হতাশায় মুষড়ে পড়লেন। শেষ পর্যন্ত সাংসারিক চাপ আর পত্নী বিয়োগের বেদনায় এম.এ. পড়া আর করা হলো না। একান্ত বাধ্য হয়ে পড়াশোনায় ইতি টেনে কর্মজীবনে ঢুকে পড়লেন। জীবন তো আর থেমে থাকে না।
দু'একটি স্কুলে দু'এক বছর চাকরি করতে করতে
১৯২০ সালে তিনি শিক্ষকতা করতে এলেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার হরিনাভী স্কুলে। ভাড়া থাকতেন কাছেই রাজপুরের নগেন বাগচীর বাড়িতে।
বৈঠকখানা ঘরের দক্ষিণের বারান্দায় বসে আছেন নবাগত মাস্টারমশাই। বাইরে বৃষ্টি ঝরছে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে আম জাম পেয়ারা গাছের শাখা প্রশাখা। গাছের পাতা হতে সেই জলকণা টপ টপ করে পড়ছে সোঁদা মাটিতে। গ্রাম বাংলার সেই অপরূপ দৃশ্য তিনি দু'নয়ন ভরে উপভোগ করছেন। এমন সময় খেয়াল করলেন রাস্তা দিয়ে একটা সতের আঠের বছরের ছেলে যাচ্ছে। মাস্টারমশাই তাকে কাছে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন- "কী নাম তোমার?"
- আজ্ঞে যতীন, যতীন্দ্র মোহন রায়। আপনাকে এখানে প্রথম দেখছি মনে হয়...
- হ্যাঁ, আমি নতুন এসেছি। হরিনাভি স্কুলের মাস্টার মশাই।
- তাই না কি? তার মানে তো আপনি বি. এ. এম.এ. পাশ করেছেন?
- না এম. এ. করা হয়নি, তবে বি. এ. টা হয়েছে। তা তুমি বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে কোথায় যাচ্ছো?
- আমাদের এখানে "বিশ্ব" নামে একটা পত্রিকা প্রকাশ হয়। সেই পত্রিকায় আমার লেখা কবিতা ছাপা হয়েছে। আপনি হয়তো জানেন না এখানে সবাই আমাকে বালক কবি নামেই চেনে...
- ও তুমি বুঝি সাহিত্যচর্চা করো? খুব ভালো।
- মাস্টার মশাই আপনি তো বি. এ. পাশ করেছেন। তার মানে আপনার কাছে সাহিত্যচর্চাটা কোনো ব্যাপারই না।
- না না ও'সব রোগ আমার ধরেনি। ও'গুলো সবার দ্বারা হয় না। শুধু শিক্ষা থাকলেই সাহিত্য আসে না। ভেতরে সেই রস থাকতে হয় ,সাধনা করতে হয় .....
- কী যে বলেন মাস্টার মশাই! আমার মতো ছেলে যদি পারে, আপনার কাছে এগুলো কিছুই নয়। আসুন না দু'জনে একসাথে উপন্যাসের সিরিজ বের করি? দারুণ চলবে। আপনার মতো পণ্ডিত মানুষ থাকলে এ আর এমন কী কাজ....
- আরে না না। এসব কি ছেলেখেলার কাজ, আমি লিখবো উপন্যাস?
- হয়ে যাবে মাস্টার মশাই,আপনি শুরু করুন।

বাকিটা ভিডিওতে দেখুন।।

#অডিওগল্প #জীবনী #বিভূতিভূষণবন্দ্যোপাধ্যায় #জীবনের_অজানা_তথ্য
#যতীন্দ্রমোহনরায়
#সূর্য_ওঠার_আগে
#অডিও_স্টোরি

Loading comments...